
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টা করে একটি ভবন থেকে ফেলা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে
এবার এক যুবতীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের পরে ঐ তরুণীকে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের পাঁচতলা থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয় বলেও তাঁর বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
দিল্লির বেগমপুর এলাকা এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রোহিতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আহত তরুণীকে এলাকার বিএসএ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবারের এ ঘটনা ঘটে বলে আনন্দবাজার পত্রিকার খবেরে বলা হয়েছে।
পুলিশের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, নির্যাতিতা তরুণী দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলের কর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এবং রোহিত আরও দুই বন্ধুর সঙ্গে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন।
বন্ধুদের রোহিত বলেন, তিনি তাঁর বাবার গাড়িতে করে প্রত্যেককে বাড়িতে নামিয়ে দেবেন। এর পরে রোহিতরা একটি অটো নিয়ে বেগমপুর এলাকায় আসেন।
দুই বন্ধুকে অটোতে অপেক্ষা করতে বলে তরুণীকে নিয়ে কাছের একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে যান। বন্ধুদের তিনি জানান, ওই বহুতলের নীচেই তাঁর বাবার গাড়িটি দাঁড় করানো রয়েছে। অন্য দুই বন্ধু রাস্তায় অপেক্ষা করতে থাকেন।
প্রায় আধ ঘণ্টা পরে ওই দুই বন্ধু বহুতলের উপর থেকে কিছু একটা পড়ার শব্দ পান। সেই সঙ্গে তরুণীর চিৎকার। স্থানীয় বাসিন্দারাও পুলিশকে খবর দেন নির্মীয়মান বহুতলের পাঁচতলা থেকে একটি মেয়ে নীচে পড়ে গিয়েছে। তাঁর জামাকাপড় ছেঁড়া। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত রোহিত স্বীকার করেছেন, মত্ত অবস্থায় নির্মীয়মাণ ওই বহুতলের পাঁচতলায় নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন এবং ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দেন। রোহিতকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
নির্ভয়া কাণ্ডের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল গোটা দেশ। কিন্তু তার পরেও রাজধানীতে মহিলাদের উপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। কখনও ধর্ষণের পরে চলন্ত গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে তরুণীকে, কখনও রেস্তোরাঁর বাইরে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন নাগাল্যান্ডের তরুণী।
সম্প্রতি রাতের চণ্ডীগড়ে আইএএস অফিসার বীরেন্দ্র কুণ্ডূর মেয়ে বর্ণিকাকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ধাওয়া করা, উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে হরিয়ানা বিজেপির সভাপতি সুভাষ বরালার ছেলে বিকাশ ও তার বন্ধু আশিস কুমারের বিরুদ্ধে। দুই অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কিন্তু তাৎপর্যপূণ ভাবে এই ঘটনার পরেই বর্ণিকা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ভাগ্য ভাল ধর্ষিতা বা খুন হয়ে যেতে হয়নি। অর্থাৎ নির্ভয়া কাণ্ডের পরেও দেশ জুড়ে মেয়েদের উপর নিগ্রহে লাগাম টানা যায়নি।
দিল্লির বেগমপুরের ঘটনা আরও এক বার সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সেই সঙ্গে আরও এক বার প্রশ্ন তুলে দিল রাজধানীতে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে।
এর অাগেও দিল্লিতে বাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর মেয়েটি ও তাঁর বন্ধুকে জামা-কাপড় খুলে, অর্ধনগ্ন করে বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয়।
মেয়েটি ও তার বন্ধু সিনেমা দেখে রাত ১১টার পর হোয়াইট লাইন পরিবহনের একটি বাসে চড়েন। বাসে আর কোন যাত্রী ছিল না। পুলিশ জানায়, পরিবহন শ্রমিকরা মেয়েটিকে প্রথমে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। তরুণী ও তার বন্ধু এর প্রতিবাদ জানালে ৫ থেকে ৭ জন পরিবহনকর্মী চলন্ত বাসেই মেয়েটির শ্লীলতাহানি ঘটায়।
জানা যায়, চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর লোহার রড দিয়ে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে প্রহার করা হয় মেয়েটিকে। মুখ ও পেটে একাধিক আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করার পর রবিবার রাতেই একাধিকবার অস্ত্রোপচার হয়েছে মেয়েটির।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ধর্ষিতার অন্ত্রে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। আপাতত ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে তাঁকে। তবে তাঁর পুরুষবন্ধুকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশি তদন্তে সাহায্য করছেন তিনি।
দিল্লির বসন্ত বিহার এলাকায় একটি হোয়াইট লাইন বাসে ২৩ বছরের ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে পাঁচজন যুবক।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ধর্ষণের পর ২৩ বছরের ওই তরুণী ও তাঁর পুরুষ বন্ধুকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় একটি উড়ালপুলের ওপর ফেলে দেওয়া হয়। ধর্ষিতা দক্ষিণ দিল্লির পালম এলাকার বাসিন্দা।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ধর্ষণের পর ২৩ বছরের ওই তরুণী ও তাঁর পুরুষ বন্ধুকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় একটি উড়ালপুলের ওপর ফেলে দেওয়া হয়। ধর্ষিতা দক্ষিণ দিল্লির পালম এলাকার বাসিন্দা।
ধর্ষিতার এক আত্মীয়র বয়ান অনুযায়ী, রাত ১১টা নাগাদ ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু দক্ষিণ দিল্লির মুনিরকা থেকে একটি হোয়াইট লাইন বাসে ওঠেন। তাঁরা বাসে ওঠার ১০ মিনিটের মাথায় পাঁচজন যুবক তরুণীকে নানা ভাবে উত্তক্ত করতে শুরু করে।
পুরুষ বন্ধুটি বাধা দিলে তাঁকে মারধর করতে শুরু করে দুষ্কৃতীকারীরা। ধর্ষিতার এক আত্মীয় জানিয়েছেন,দুষ্কর্মের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য দুজনেরই শরীর থেকে বেশির ভাগ জামাকাপড় খুলে নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির মহিপালপুর উড়ালপুলের উপর দুজনকে ছুড়ে ফেলা হয়।
সূত্র মতে, ধর্ষিতা দিল্লি ইউনার্ভাসিটিতে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। তাঁর বন্ধুটি একটি সফটওয়্যার কম্পানিতে কর্মরত। রাতে দিল্লির সকেত এলাকার সেলেক্ট সিটি ওয়াক মলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন দুজনে।
তারপর তরুণীকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁকে নিয়ে একটি অটোতে ওঠেন তাঁর বন্ধু। মুনিরকা এলাকায় অটো থেকে নেমে পালমগামী হোয়াইট লাইন বাসটিতে উঠেছিলেন দুজনে।
মুনিরকা এলাকা ও মহিপালপুর উড়ালপুলের সিসিটিভির ফুটেজ থেকেও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। ধর্ষিতা ও তাঁর বন্ধুর বিবরণ অনুসারে দুষ্কৃতীদের স্কেচও বানানো হয়েছে। সূত্র : ডেকান হেরাল্ড ও জিনিউজ